বড়লেখায় মহিলা আইনজীবি আবিদা সুলতানা হত্যার স্বীকারোক্তি দিয়েছে ১০ দিনের রিমান্ডে থাকা খুনের মামলার প্রধান আসামী মসজিদের ইমাম তানভীর আলম। রিমান্ডের ৪র্থ দিনেই হত্যার ব্যাপারে পুলিশের কাছে সে মূখ খুলে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ তাকে বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করলে বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট হরিদাস কুমারের আদালতে সে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। পরে আদালত তাকে মৌলভীবাজার জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।
আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে মসজিদের ইমাম তানভীর আলম জানিয়েছে, ঘটনার দিন মহিলা আইনজীবি আবিদা সুলতানার সাথে বাসা ভাড়া ও পৈত্রিক বাড়ির গাছ বিক্রি নিয়ে তার তুমুল ঝগড়া ঝাটি হয়। এক পর্যায়ে আবিদা সুলতানা খারাপ ভাষায় গালি দিয়ে দাঁড়ি ও লুঙ্গি ধরে টান দেয়ায় তার রক্ত মাথায় উঠে যায়। রাগের মাথায় সে পানির ফিল্টারের ঢাকনা দিয়ে সজোরে আবিদার মাথায় আঘাত করে।
রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের মধ্যে অনেকক্ষণ দু’জনের ধস্তাধস্তি হয়। চরম উত্তেজনায় গলায় ও মাথায় কাপড় পেছিয়ে তাকে মাটিতে ফেলে দেই। মৃত্যু ঘটায় বাসায় তালা দিয়ে বেরিয়ে পড়ি।
গত ২৬ মে বড়লেখায় পৈত্রিক বাসায় নির্মমভাবে খুন হন মৌলভীবাজার জেলা বারের নিয়মিত আইনজীবি অ্যাডভোকেট আবিদা সুলতানা। তিনি উপজেলার কাঠালতলীর মাধবগুল গ্রামের মৃত হাজী আব্দুল কাইয়ুমের বড় মেয়ে।
হত্যাকান্ডের পরই ওই বাসার অপরাংশের ভাড়াটিয়া স্থানীয় মসজিদের ইমাম তানভীর আলম (৩৪) বাসায় তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন সন্দেহভাজন খুনি হিসেবে শ্রীমঙ্গল থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তার স্ত্রী হালিমা সাদিয়া (২৮) ও মা নেহার বেগমকে (৫৫) আটক করেছিল।
মহিলা আইনজীবি আবিদা সুলতানা খুনের ঘটনায় তার স্বামী মো. শরিফুল ইসলাম বসুমিয়া ইমাম তানভীর আলম, তার ছোটভাই আফছার আলম, স্ত্রী হালিমা সাদিয়া ও মা নেহার বেগমকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আসামী তানভীর আলম, তার স্ত্রী হালিমা সাদিয়া ও মা নেহার বেগমকে গত ২৮ মে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড চায়। আদালত তানভীরের ১০ দিনের এবং তার স্ত্রী ও মায়ের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের ৪র্থ দিনেই হত্যার দায় স্বীকার করে মামলার প্রধান আসামী তানভীর আলম।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জসীম জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধান আসামী তানভীর আলম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে তাৎক্ষনিক উত্তেজনা বশতই সে হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে। রিমান্ডে থাকা অপর দুই আসামীকেও শনিবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পলাতক আসামী আফছার আলমকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।